বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের একের পর এক গোলাবর্ষণ ও আক্রমণের ঘটনায় দেশটির রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে।এ নিয়ে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে চারবার তলব করা হলো। রোববার সকালে অং কিউ মোয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অণু বিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নাজমুল হুদার দপ্তরে তলব করা হয়।সীমান্তে গোলাবারুদ বর্ষণ ও হামলার ঘটনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমারের পাহাড় থেকে ছোড়া মর্টারের একাধিক গোলা রাখাইনের ওয়ালিডং পাহাড়ের পাদদেশের শূন্যরেখার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে এসে পড়ে। এতে মো. ইকবাল নামে এক কিশোরের প্রাণ যায়। আহত হন আশ্রয়শিবিরের পাঁচজন।
ওই দিন বেলা ৩টার দিকে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখার ৩৫ নম্বর পিলারের কাছাকাছি জায়গায় গরু আনতে গেলে স্থলমাইন বিস্ফোরণে অথোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে বাংলাদেশি এক তরুণের বাঁ পায়ের গোড়ালি উড়ে যায়। ঘুমধুমের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হেডম্যানপাড়ার বাসিন্দা ওই তরুণের চিকিৎসা চলছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।এদিকে শূন্যরেখায় আরও মাইন পোঁতা থাকতে পারে, এমন শঙ্কায় মাঠে যাচ্ছেন না কৃষকরা।শনিবারও সকাল সোয়া ৯টা থেকে রাখাইনের ওয়ালিডং পাহাড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এ অবস্থা চলে বেলা ২টা পর্যন্ত। পরে গোলাগুলির আওয়াজের তীব্রতা কমে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা এ কথা জানিয়েছেন।
মিয়ানমার থেকে আসা গোলার বিস্ফোরণে রোহিঙ্গাদের হতাহতের ঘটনার পর শনিবার সকালে সীমান্ত এলাকায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে থাকার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।এর আগে ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি গুলি তুমব্রু বাজারের পাশে কোনারপাড়ার কৃষক শাহজাহানের বাড়ির আঙিনায় এসে পড়ে। বাড়ির পাশেই শূন্যরেখায় রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির। এর আগেও বাংলাদেশের ভূখণ্ডে মিয়ানমারের হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া দুটি গোলা এসে পড়েছিল। এসব ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছিল ঢাকা।তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে শূন্যরেখায় পাঁচ বছর ধরে আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে বাস করছে মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা। আশ্রয়শিবির ঘেঁষে (পেছনে) মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ও রাখাইন রাজ্যের একাধিক পাহাড়।