বাংলা, আরবি, ফার্সি ও চীনাসহ ১০টি ভাষায় রেডিও সম্প্রচার বন্ধ করছে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস। একইসঙ্গে ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের প্রায় ৩৮২টি পদ বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে।প্রতিষ্ঠানটির আন্তর্জাতিক পরিষেবার জন্য বার্ষিক সাড়ে ২৮ মিলিয়ন পাউন্ড সঞ্চয়ে এমন প্রস্তাব করা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।তবে কোনো ভাষার পরিষেবাই একেবারে বন্ধ হবে না। প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রোতাদের সঙ্গে সংস্পর্শ বাড়াতে অনেকগুলো অনলাইনে যুক্ত হবে। এ ছাড়া ‘সিবিবিসি’ ও ‘বিবিসি ফোর’ এরও অনলাইনে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে। এর ফলে বছরে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ড সঞ্চয় করতে যাচ্ছে বিবিসি।
গত জানুয়ারিতে সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী নাদিন ডরিস দুই বছরের জন্য লাইসেন্স ফি ১৫৯ পাউন্ড স্থগিত করা হবে বলে ঘোষণা করেন। উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের জন্য এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানায় বিবিসি।
অন্য যেসব ভাষার রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হবে সেগুলো হলো— কিরগিজ, উজবেক, হিন্দি, ইন্দোনেশিয়ান, তামিল ও উর্দু। আর শুধু অনলাইনে যুক্ত হওয়া ভাষাগুলো হলো— চীনা, গুজরাটি, ইগবো, ইন্দোনেশিয়ান, পিডগিন, উর্দু ও ইওরুবা।
তবে ওয়ার্ল্ড সার্ভিস ইংলিশ ২৪ ঘণ্টা সংবাদ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে। এ ছাড়া বিবিসির কিছু ভাষার পরিষেবার কার্যালয় লন্ডন থেকে সরিয়ে সংশ্লিষ্ট শ্রোতাদের কাছাকাছি স্থানান্তর করা হবে। যেমন— থাই পরিষেবা লন্ডন থেকে ব্যাংককে, কোরিয়ান পরিষেবা সিউলে, বাংলা পরিষেবা ঢাকায় ও ফোকাস অন আফ্রিকা টিভি বুলেটিন নাইরোবিতে স্থানান্তর করা।
এসব প্রস্তাবের বিষয়ে এখন স্টাফ ও ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করবে বিবিসি। তবে বেক্টুর সম্প্রচার ইউনিয়নের প্রধান ফিলিপা চাইল্ডস বলেছেন, প্রস্তাবিত পরিবর্তন দেখে তিনি হতাশ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা স্বীকার করি পরিবর্তিত মিডিয়া ল্যান্ডস্কেপের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় বিবিসিকে মানিয়ে নিতে হবে। কিন্তু আবারো প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা সরকারের দুর্বল-মূল্যায়িত রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। লাইসেন্স ফি আটকে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের ফলে তহবিল নিয়ে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এই প্রস্তাবগুলোকে অনিবার্য করে তুলেছে।বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিস হলো আন্তর্জাতিক মাল্টিমিডিয়া সম্প্রচারমাধ্যম যা বিভিন্ন ভাষা ও অঞ্চলে রেডিও, টিভি ও ডিজিটালে মাধ্যমে সংবাদ সরবরাহ করে। ব্রিটেনের জাতীয় এ মাধ্যম বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৩৬৪ মিলিয়ন মানুষের কাছে পৌঁছায়, যাদের প্রায় অর্ধেকই এই সেবা নিয়ে থাকেন অনলাইনে।