সাফের ফাইনালে মুখোমুখি বাংলাদেশ-নেপাল। দশরথ স্টেডিয়ামে রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই উল্লাসে মাতল বাংলাদেশ।
পিনপতন নিরবতা নেপালের গ্যালারিতে। আরও একবার স্বপ্ন ভঙ্গ স্বাগতিক নেপালের। গত আসরের মত এবারও বাংলাদেশের কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হলো তাদের। বাংলার বাঘিনীরা মাতল হিমালয় জয়ের উল্লাসে। নেপালকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ঘরে তুলে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটালেন সাবিনারা।
দশরথ স্টেডিয়ামে ফাইনালটা হলো ফাইনালের মতোই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচ রং ছড়াতে শুরু করে। প্রথমার্ধে ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হলো না দুই দলের। দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই চললো সমানতালে। বাংলাদেশের হয়ে গোল করলেন মনিকা চাকমা এবং ঋতুপর্ণা চাকমা। ম্যাচে সমতায় ফিরলেও শেষ পর্ন্তয জয়টা অধরাই রয়ে গেল নেপালের।
ম্যাচের শুরুতেই গোলের সুযোগ পেলেও তহুরার শট ক্রস বারে লেগে ফিরে আসে। ক্রসবারের বাধায় প্রথমার্ধে এগিয়ে যওয়া হয়নি বাংলাদেশের। একই ভাবে নেপালেরও বাধা হয়ে দাড়িয়েছে ক্রসবার।
দ্বিতীয় মিনিটে গীতা রানার ভুলে গোল হজম করতে বসেছিল নেপাল। গোলকিক নিতে এসে পিছলে পড়ে ঠিকঠাক শট নিতে পারেননি। বক্সের বাইরে থাকা তহুরা খাতুন বল পেয়ে গোলে শট নেন। ক্রসবারে লেগে বল ফিরে আসে। ফিরতি বলে তহুরার হেড নেপালের গোলরক্ষ আঞ্জিলা সুব্বুর গ্লাভসে জমা পড়লে রক্ষা পায় নেপাল।
ক্রসবারের বাধায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালেরও। ম্যাচের ১০ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে সাবিত্রা ভান্ডারির উদ্দেশ্যে মাঝ মাঠ থেকে উচু পাস বাড়ান প্রীতি। বক্সের ভেতর ঢোকা বল ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক রূপনা চাকমা। ফিরতি বলে সাবিত্রার ক্রস বক্সের বাইরে পেয়ে যান আমিসা। তার জোরালো শট ক্রসবারে লেগে ফিরে আসলে এগিয়ে যাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। আক্রমণ-প্রতিআক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেললেও প্রথমার্ধ শেষ হয়েছে গোলশূন্য ভাবেই।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় দুই দলই। ৫২ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা মেলে বাংলাদেশের। বক্সের বাইরে তহুরার উদ্দেশ্যে পাস দেন সাবিনা। তবে বল পান নেপালের ফুটবলার রানা মাগার। তার ভুল পাসের সুযোগ নিতে ভুল করেননি মনিকা চাকমা। আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান তিনি।
সমতায় ফিরতে সময় নেয়নি নেপাল। চার মিনিটের ব্যবধানে আমিসা কার্কির গোলে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা। প্রীতির ডিফেন্সচেরা থ্রু বল বক্সের কাছে বল পেয়ে যান আমিশা। একাই বল নিয়ে বক্সে ঢুকে রূপনাকে বোকা বানান তিনি। ৬০ মিনিটে অল্পের জন্যে এগিয়ে যাওয়া হয়নি নেপালের। সাবিত্রা ভান্ডারির শট অল্পের জন্য সাইড পোস্ট ঘেষে বেরিয়ে যায়।
৬৭ মিনিটে মারিয়ার বুলেট গতির শট ঝাপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন নেপালের গোলরক্ষক। ঋতুপর্ণার পাস থেকে বক্সের বাইরে বল পান মারিয়া। সেখান থেকেই জোড়ালো শট নেন তিনি।
৮১ মিনিটে বাংলাদেশের ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হলেন ঋতুপর্ণা চাকমা। বা প্রান্ত থেকে ঋতুর দূরপাল্লার শট নেপালের গোলরক্ষকের হাত ছুঁইয়ে জালে ঢোকে। এই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। খেলার বাকি সময়ে চেষ্টা করেও আর ম্যাচ ফিরতে পারেনি নেপাল। এ সময় বেশ কয়েকটি হাফচান্স তৈরি করে বাংলাদেশ। তবে রক্ষণে বেশি মনোযোগী বাংলাদেশও পায়নি গোলের দেখা।