গত বছরে অক্টোবরে ২০৩৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য একটি দেশ হিসেবে বিড করেছিল সৌদি আরব। ১০ বছর পরের বিশ্বকাপের আয়োজক হতে যাচ্ছে, সেটি তখনই নিশ্চিত করেছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। এবার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনাও জানিয়েছে সৌদি।
৪৮টি দলকে নিয়ে এই বিশ্বকাপ আয়োজন করবে দেশটি। এর আগে এত বেশি দল নিয়ে বিশ্বকাপের আয়োজনের রেকর্ড নেই কারো।
বুধবার সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল হবে ৫টি শহরের ১৫টি স্টেডিয়ামে। শহরগুলো হলো- রিয়াদ, জেদ্দা, আল খোবার, আবহা ও নিওম। গত মঙ্গলবার সৌদি আরব ফিফার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে টুর্নামেন্টের বিড করার পর এ ঘোষণা এসেছে।
রাজধানী রিয়াদেই হবে ৮টি স্টেডিয়াম। যার মধ্যে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে ৯২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার। নির্মাণাধীন এই স্টেডিয়ামের নাম কিং সালমান স্টেডিয়াম। এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৯ সালে। এখানেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে নির্মাণের পর সৌদি জাতীয় ফুটবল দলের হোমভেন্যু হিসেবে বিবেচিত হবে এই মাঠ।
২০২২ সালে সফলভাবে কাতার বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। ২২০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছিল তারা। আয়তনে অনেকটাই ছোট দেশটির অনুপ্রেরণায় গত বছর অক্টোবরে বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য বিড করে পাশ্ববর্তী দেশ সৌদি। সে সময় তাদের বিড করেছিল অস্ট্রেলিয়াও। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়া প্রার্থিতা প্রত্যাহার করলে একাই বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পায় সৌদি।
সৌদি অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক কমিটির ক্রীড়ামন্ত্রী এবং সভাপতি প্রিন্স আব্দুল আজিজ বিন তুর্কি আল-ফয়সাল বলেন, ‘ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজন করে সৌদি আরবের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য আমরা একসাথে কাজ করছি। যেমনটি আমাদের অফিসিয়াল বিড বইয়ে বলা হয়েছে।’
এছাড়া বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি ক্রীড়ার ক্ষমতায়ন ও যেকোনো সমস্যা সমাধানে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দেশটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান।
বিশ্বকাপের উদ্দেশে নির্মিত স্টেডিয়ামগুলোর মাধ্যমে নিজেদের ঐতিহ্য বিশ্ববাসীর মাঝে তুলে ধরবে সৌদি। নানা ঢংয়ে ও কারুকার্যে নিজেদের সভ্যতা ও সংস্কৃতির জানান দেবে দেশটি। কিং সালমান স্টেডিয়াম ছাড়াও সৌন্দর্যমণ্ডিত বেশকিছু মাঠ তৈরি করবে তারা।
বর্তমানে রিয়াদের অন্যতম বিখ্যাত একটি স্টেডিয়াম হলো কিং ফাহাদ স্পোর্টস সিটি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের আগে এটি সংস্কার করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি আসন সংখ্যা ৭০ হাজারে বর্ধিত করা হবে। স্টেডিয়ামটিতে লোহিত সাগরের প্রবালপ্রাচীরের চিত্রায়ন করা হবে।
স্থানীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতা প্রতিফলন ঘটিয়ে জেদ্দায় নির্মাণ করে জেদ্দা সেন্ট্রাল ডেভেলপমেন্ট স্টেডিয়াম। সেখানে থাকবে কাঠের কারুকার্য। মূলত, আল বালাদ শহরের কাঠের ঘরবাড়ির প্রতিনিধিত্ব করবে এই স্টেডিয়াম।
এছাড়া আরব উপসাগরের পাশে নির্মিত হবে আরামকো স্টেডিয়াম। সেখানে ফুটিয়ে তোলা হবে সাগরের মনোরম দৃশ্য। কিং খালিদ ইউনিভার্সিটি স্টেডিয়ামের আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার করা হবে।