রাশিয়া এখন উচ্চ আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বব্যাংকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে দেশটির অর্থনৈতিক উন্নতি দেখে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে রাশিয়া বিভিন্ন বিধিনিষেধের মুখোমুখি হয়েছে। পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক বেশ কয়েকটি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও রাশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত হয়েছে।বিশ্বব্যাংক প্রতি বছর দেশের নাগরিকদের গড় আয় অনুযায়ী একটি তালিকা তৈরি করে। এই তালিকায় রাশিয়া আগে উচ্চ-মধ্য আয়ের দেশে ছিল, কিন্তু এখন তারা উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্বব্যাংক দেশগুলোকে চারটি বিভাগে ভাগ করে: উচ্চ আয়, উচ্চ-মধ্য আয়, নিম্ন-মধ্য আয় এবং নিম্ন আয়। এই তালিকায় ভারতের অবস্থান এখনও নিম্ন-মধ্য আয়ে, যদিও তারা একসময় নিম্ন আয়ের দেশ ছিল।
বিশ্বব্যাংকের মতে, এক দেশের নাগরিকদের বার্ষিক গড় আয় ১১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হলে সেই দেশ উচ্চ-মধ্য আয়ের তালিকায় স্থান পায়। রাশিয়া এই মানদণ্ড পূরণ করে এখন উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে।
এই উন্নতির কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা পুতিন সরকারের নীতি এবং যুদ্ধের সময় দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাকে উল্লেখ করেছেন। যুদ্ধের সময়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ব্যয় বাড়ানো হয়েছে, যা দেশের সাধারণ নাগরিকদের আয় বাড়াতে সহায়ক হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের বেকারদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করেছে।
তবে রাশিয়ার এই উন্নতি নতুন চ্যালেঞ্জের জন্ম দিয়েছে। দেশটিকে এখন উচ্চ হারে কর আদায় করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, করের বোঝা মূলত উচ্চবিত্ত নাগরিকদের ওপর পড়বে, মধ্যবিত্তদের ওপর তেমন প্রভাব পড়বে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার এই নীতি থেকে ভারতসহ অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষা নেওয়া উচিত। রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নতি প্রমাণ করে যে সঠিক নীতি এবং কার্যকর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাধা পেরিয়েও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সম্ভব। সূত্র : আনন্দবাজার