প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র পাপুয়া নিউগিনির পূর্বাঞ্চলের কিরিউইনা দ্বীপে উপজাতীয় দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং ১৫ জন নিখোঁজ হয়েছেন।সোমবার মিলানে উপসাগরীয় প্রদেশে অবস্থিত দ্বীপটিতে কুলুমাতা ও কুবোমা জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দেশটির রাজধানী পোর্ট মোর্সবি থেকে পুলিশের একটি দল সেখানে গেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তামন্ত্রী পিটার সিয়ামালিলি জেএনআর। তিনি বলেন, পুলিশ কমিশনার ডেভিড ম্যানিং এই অভিযানের দায়িত্বে আছেন।মন্ত্রী বলেন, দ্বীপে আজ মোতায়েন করা পুলিশের দলকে ওই এলাকায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা, মাঠে নেতৃত্ব দেওয়া এবং শান্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে সহায়তা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।সরকার এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করতে পারেনি। তবে সরকারি সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে যে ৩২ জন মারা গেছে। আর স্থানীয়রা অনুমান করছেন আরও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র, যারা প্রতিশোধের ভয়ে তাদের নাম প্রকাশ করতে চায়নি, তারা জানিয়েছে, গত মাসে কুবোমা সাইডের বোতালু গ্রামের এক ব্যক্তি ফুটবল খেলা নিয়ে মারামারির সময় নিহত হওয়ার পরে এই লড়াই শুরু হয়।তিনি বলেন, কুবোমা গ্রামবাসীরা কুলুমাতা গ্রামের ইয়াম বাগানগুলি ধ্বংস করে প্রতিশোধ নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে, যা তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। কুলুমাতা গ্রামবাসীরা যখন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে যায়, তখন তারা কুবোমা গ্রামবাসীদের একটি দলের মুখোমুখি হয় এবং মারামারি শুরু হয়।
স্থানীয় আরেকজন বলেন, দ্বীপে এ ধরনের সহিংসতা তিনি ভয় পেয়েছেন। কারণ এমনটা কখনই ছিল না। শান্তির জন্য স্থানীয়রা দ্বীপটিকে ‘ভালোবাসার দ্বীপ’ বলে জানে। তিনি বলেন, উপজাতীয় লড়াই সবসময়ই আমাদের জীবন ও সংস্কৃতির অংশ ছিল, কিন্তু সাধারণত যখন কেউ নিহত হয়, তখন লড়াই বন্ধ হয়ে যায়, তারা গুলি বন্ধ করে দেয়। কিন্তু এবারের দৃশ্য ভিন্ন।কুলুমাতা এবং কুবোমার জনগণের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভালো। কিন্তু মা, বোন, কন্যা হিসাবে আমাদের জন্য এটি হৃদয়বিদারক যে আমাদের লোকেরা নিজেদের মধ্যে এভাবে লড়াই করে।তিনি বলেন, সহিংসতা ভয়াবহ ছিল। আমরা সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে গেছি। তারা নারী ও শিশুদের কোনো ক্ষতি করবে না এটা ঠিক। কিন্তু রক্তক্ষয়ী লড়াই দেখাটা খুবই ভয়ংকর ছিল, তাই আমরা পালিয়ে গেছি।