যুক্তরাষ্ট্রের পার্লান্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে (হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে একটি রেজ্যুলেশন পেশ করেছেন আমেরিকান কংগ্রেসম্যান স্টিভ শ্যাবো এবং রো খান্না।১৪ অক্টোবর এই প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় বলে আজ জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম দ্য হিন্দু।আট পৃষ্ঠার এই রেজ্যুলেশনে ১৯৭১ সালের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে ‘বাংলাদেশের কাছে পাকিস্থান সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে’ বলে উল্লেখ করা হয়।এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রতি ১৯৭১ সালে ‘বাঙালি ও হিন্দুদের’ প্রতি চালানো পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর নৃশংসতাকে ‘গণহত্যা’ হিসাবে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
রিপাবলিকান পার্টির সদস্য শ্যাবো এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা লক্ষ লক্ষ মানুষকে গণহত্যার এই স্মৃতি মুছে যেতে দিতে চাই না। গণহত্যার স্বীকৃতি ঐতিহাসিক রেকর্ডকে শক্তিশালী করে, আমাদের সহকর্মী আমেরিকানদের শিক্ষিত করে। এ ছাড়া অপরাধীদেরও জানাতে হবে যে, এই ধরনের অপরাধ সহ্য করা হবে না বা ভুলে যাওয়া যাবে না।তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ১৯৭১ সালের গণহত্যাকে ভুলে গেলে চলবে না। ওহাইওর ফার্স্ট ডিস্ট্রিক্টে আমার হিন্দু ভোটারদের সহায়তায়, রো খান্না এবং আমি এই স্বীকৃতি দেয়ার জন্য প্রস্তাব করেছি। বাঙালি এবং হিন্দুদের সঙ্গে চালানো এই নৃশংসতাকে ‘গণহত্যাই’ বলতে হবে।’
বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন, ডেমোক্র্যাট দলের সদস্য এবং ক্যালিফোর্নিয়ার ১৭তম কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্টের প্রতিনিধি ভারতীয় বংশোদ্ভুত রো খান্নাও।তিনি বলেন, ‘আমাদের সময়ের ভুলে যাওয়া গণহত্যার বিষয়ে প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হয়েছে। যেই সময় (১৯৭১ সালে) লক্ষ লক্ষ বাঙালি এবং হিন্দু জাতিগত গণহত্যার শিকার এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন।বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে বন্ধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। যুদ্ধের ওই নয়টি মাস এই ভূখণ্ডের নানা প্রান্তে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের এ দেশীয় দোসররা।পরাজয় নিশ্চিত জেনে আত্মসমর্পণের দুদিন আগে তারা পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, চিকিৎসক, শিল্পী, লেখক, সাংবাদিকসহ বহু খ্যাতিমান বাঙালিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতার পর যেন বাংলাদেশ যাতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে- তা নিশ্চিত করা।