হবিগঞ্জের একটি কলেজের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কলেজের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ।তারা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষকে স্বপ্রণোদিত হয়ে এ ঘটনায় মামলা করার দাবি জানিয়েছে।এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী কলেজ প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন।এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটি ধর্ষণের কোনো আলামত পায়নি বলে প্রতিবেদন দিয়েছে বলে জানা গেছে।অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১০ জুলাই দুপুরে কলেজ শেষে ওই কলেজের একটি ভবনে তাঁর এক ছেলেবন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলেন ভুক্তভোগী। এ সময় কলেজের নিরাপত্তা প্রহরী বিষয়টি দেখে তাঁদের বিরুদ্ধে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ তোলেন। পরে তিনি পুলিশ ও ছাত্রনেতাদের ভয় দেখিয়ে ওই ছেলেবন্ধুকে একটি কক্ষে আটকে রেখে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন।এ ঘটনায় ওই ছাত্রী কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। পাশাপাশি ১৩ জুলাই ওই প্রহরীকে কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
আজ দুপুরে কলেজের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত নাগরিক সমাজ।এতে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ অংশ নেন।আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক পীযূষ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও লেখক সিদ্দিকী হারুনের সঞ্চালনে সমাবেশে বক্তব্য দেন আইনজীবী জুনায়েদ আহমেদ,ওই কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, খোয়াই থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন খা, নারী অধিকারকর্মী মাহমুদা খা, নাট্যশিল্পী অদ্বিতীয়া ধর প্রমুখ।সমাবেশে বক্তারা বলেন, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। পাশাপাশি ধর্ষণে অভিযুক্ত প্রহরী ও তাঁর সহযোগীরা ফেসবুকে ভুক্তভোগী ছাত্রীর ব্যাপারে নানা অশ্লীল মন্তব্য প্রচার করছেন। বক্তারা তাঁদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনকে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করার দাবি জানান।নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর এক সহপাঠী জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর পরিবার সামাজিকভাবে হেয় হওয়ার কারণে থানায় মামলা করেনি।তবে ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনা তদন্তে তাঁরা ৫ সদস্যের একটি কমিটি করেন। কমিটি গত মঙ্গলবার প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া ওই শিক্ষার্থী এ ঘটনায় মামলা হলে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন। এ নিয়ে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। কারণ, মামলা না হলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন।