৫ আগস্টের আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবাধে প্রবেশ করতো ভারতীয় পণ্য। পুলিশ মাঝমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হলেও সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পণ্য প্রবেশ কোন ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছিল না। অভিযোগ ছিলো সীমান্তে প্রশাসন ম্যানেজ করে চোরাকারবারীরা পণ্য অনায়াসে নামাতেন। তবে ৫ আগস্টের পর সিলেট সীমান্তে বেড়েছে বিজিবির তৎপরতা।
প্রায় প্রতিদিন বিভাগের কোন না কোন সীমান্তে জব্দ করা হচ্ছে ভারতীয় চোরাই পণ্য। চলতি মাসে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আনা অন্তত ১১ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ হয়েছে।
সর্বশেষ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের সুরমা বাইপাস এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অর্ধকোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় চিনির চালান আটক করে বিজিবি। বালু ভর্তি একটি ট্রাকে করে এই চিনিগুলো সিলেট শহরে আসছিলো বলে জানা গেছে।
একই দিন সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলা ও সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবি। অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় চোরাই মালামাল, পশু ও মদ জব্দ করা হয়।
এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর দোয়ারাবাজার সীমান্তে মহিষ ও মাছের চালান জব্ধ করা হয় আর ১৭ সেপ্টেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় শাড়ি, থ্রি-পিস, লেহেঙ্গা, ধূতি ও থান কাপড়সহ বিবিধ মালামাল জব্দ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
১৮ সেপ্টেম্বর সিলেট-তামাবিল সড়ক দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে আসা বালুবাহী ট্রাক থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ভারতীয় চিনির চালান আটক করেছিলো বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
সিলেট বিভাগের সবকটি জেলার সঙ্গে রয়েছে ভারতের সীমান্ত। সিলেটের গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার অবস্থান বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্ত এলাকায়। বিভাগের অন্য তিন জেলা সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের সঙ্গেও রয়েছে ভারতের সীমান্ত। এতোদিন ধরে বিভিন্ন কৌশলে আইনশৃঙ্খলা ও যৌথবাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে চোরাকারবারিরা সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পণ্য নিয়ে আসছে। কখনো সীমান্ত এলাকায় মজুদ করে সুযোগ বুঝে তা শহরে নিয়ে আসছে। আবার কখনো পণ্য পরিবহনে তারা নিচ্ছে অভিনব কৌশল। বালু ও পাথরচাপা দিয়ে ট্রাকে করে নিয়ে আসছে চিনি, কাপড়, ঔষধ ও কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন ধরণের ভারতীয় পণ্য। চলতি মাসে সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আনা অন্তত ১০ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ হয়েছে। সীমান্তে নজরদারিও বেশি বাড়িয়েছে বিজিবি।
এ বিষয়ে কথা বলতে সিলেট ব্যাটালিয়ন ৪৮ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান পিএসসি এর মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।