থ্যালাসেমিয়া। যা একটি বংশগত রোগ। রক্তের হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন ত্রুটির কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তি রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়াতে ভোগে থাকেন। সারাদেশেই এ রোগে আক্রান্ত রয়েছেন অসংখ্য মানুষ। সিলেটেও এ রোগে ভোগছেন অনেকেই।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘ন্যাশনাল থ্যালাসেমিয়া সার্ভে ২০২৪’ এর প্রতিবেদন বলছে- থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের সংখ্যা সিলেট বিভাগে ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন- দিন দিন সিলেটে বাড়ছে এ রোগীর সংখ্যা।
বিবিএস-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে জাতীয়ভাবে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত বাহকের সংখ্যা ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। এর মধ্যে নারীর সংখ্যা ১১ দশমিক ২ শতাংশ এবং পুরুষের সংখ্যা ১১ দশমিক ৯ শতাংশ। ১৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বিবাহিত ও অবিবাহিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ জরিপ পরিচালনা করা হয়। ৮ হাজার ৬৮০ জনের ওপর এ জরিপ করা হয়েছে।
থ্যালাসেমিয়ার ধরন :
এটি প্রধানত দুই ধরনের। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। আলফা থ্যালাসেমিয়া সাধারণত বিটা থ্যালাসেমিয়া থেকে কম তীব্র। আলফা থ্যালাসেমিয়াবিশিষ্ট ব্যক্তির ক্ষেত্রে রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি প্রকৃতির হয়। অন্যদিকে বিটা থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা বা প্রকোপ অনেক বেশি।
থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণসমূহ :
রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া, ত্বক হলদে হয়ে যাওয়া বা জন্ডিস, দেহে অতিরিক্ত আয়রন জমা হওয়া, সংক্রমণ, স্প্লিন বা প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া, অবসাদগ্রস্ততা, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, অস্বস্তি, মুখের হাড়ের বিকৃতি বা মঙ্গলয়েড ফেসিস অর্থাৎ মুখ দেখতে একটু অস্বাভাবিক হবে, শারীরিক বৃদ্ধি হ্রাস পাওয়া, পেট বাইরের দিকে প্রসারিত হওয়া বা বৃদ্ধি পাওয়া, প্রস্রাব গাঢ় রংয়ের হওয়া, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ইত্যাদি।
থ্যালাসেমিয়ার কারণ:
ত্রুটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিনের কারণে থ্যালাসেমিয়া হয়। বাবা অথবা মা, অথবা বাবা-মা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়া জিন থাকলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানের মধ্যে ছড়ায়। এক সমীক্ষায় দেখা যায়, বাবা এবং মা উভয়ের থ্যালাসেমিয়া জিন থাকলে ভূমিষ্ঠ শিশুর শতকরা ২৫ ভাগ থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয়।