অমানিশার অন্ধকার মুক্ত একটি বৈষম্যহীন, নিরাপদ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ার প্রত্যয় নিয়ে গতকাল ১৫ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় উদীচী, মন্ট্রিয়ল শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছে। স্থানীয় ক্যাফে রয়াল রেস্টুরেন্টে ‘দ্রোহের গান ও কবিতা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিল্পী অংশ নেন। গান, নৃত্য, আবৃত্তি প্রতিটি পর্বই ছিল শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালির এখনও ‘অধরা’ মুক্তির সংগ্রামের বজ্রউচ্চারণ।
শিল্পী শর্মিলা ধরের গ্রন্থনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনায় বরাবরের মতোই একটি সাবলীল সুন্দর অনুষ্ঠান পরিবেশন করে উদীচী।
“… এ লড়াই মহাকালের খুলবে দুয়ার / এ লড়াই সূর্য ওঠার আনবে জোয়ার / এ লড়াই বাঁচার লড়াই / এ লড়াই জিততে হবে / এ লড়াই মরণজয়ী করতে হবে রে …“
কিংবা ….“ মা গো ভাবনা কেন / আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে / তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি / তোমার ভয় নেই মা / আমরা প্রতিবাদ করতে জানি …”
– এরকম গণজাগরণী, আত্মপ্রত্যয়ী অনেকগুলো দেশাত্মবোধক গান হয় সম্মিলিত এবং একক কণ্ঠে। কবিতায় কিংবা নৃত্যেও ওঠে আসে সাম্য আর অধিকার প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। উদীচী, মন্ট্রিয়ল’র সভাপতি বাবলা দেব স্বাগত বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এটি রুখে দিতে প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক প্রতিটি শক্তির ঐক্যবদ্ধভাবে নতুন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া এখন সময়ের দাবী।
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানের নামের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই সাজানো হয়েছিল প্রতিটি পর্ব। সেখানে আয়োজক সংগঠনের প্রতিনিধির সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য ছাড়া আর কারো বক্তব্য ছিল না। ছিল না বক্তৃতা মঞ্চ, ছিল না কোনো সভাপতি, অতিথি।
অনুষ্ঠান জুড়ে ছিল শোক, শ্রদ্ধা আর আবারও একাত্তরের মন্ত্রে উজ্জীবিত হওয়ার আবহ।দ্রোহের গান ও কবিতার চেতনায় সাজানো একটি সুগ্রন্থিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হলভর্তি দর্শকরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপভোগ করেন।
অনুষ্ঠান শেষে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয় সবাইকে।