লন্ডনে সর্বদলীয় ইসলামী ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম ” মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত লন্ডন” কর্তৃক আয়োজিত একটি প্রতিবাদ সমাবেশে ভারতে জনৈক ধর্ম পুরোহিত কর্তৃক মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সর্বজন স্বীকৃত মহান ব্যক্তিত্বের উপর সম্পূর্ণ মিথ্যা অপবাদ আরোপ এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব সম্পর্কে ঘৃণ্য কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে । প্রতিবাদ সমাবেশে সংশ্লিষ্ট ধর্ম পুরোহিতের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ও জোর দাবিউত্থাপন করা হয় । স্বল্প সময়ের নোটিশে আয়োজিত হলেও এ প্রতিবাদ সমাবেশে লন্ডনের সর্বদলীয় উলামায়ে কেরাম, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এবং সর্বস্তরের তাওহীদি জনতা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে অংশ গ্রহণ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত লন্ডন এর সভাপতি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া। সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারী মাওলানা মুফতি আবদুল মুনতাকিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সৈয়দ নাঈম আহমদ এর পরিচালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দারুল উলূম করাচীর নায়েবে মুহতামিম আল্লামা মুফতি যুবায়ের উসমানী। বিশেষ অতিথির আলোচনা পেশ করেন ইকরা টিভি গ্রুপের চেয়ারম্যান ইমাম কাসিম রশীদ আহমদ, শায়খুল হাদীস মাওলানা মুফতি আবদুর রহমান, ডঃ মাওলানা শুয়াইব আহমদ, মাওলানা সাদিকুর রহমান, মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী, মাওলানা ফয়েজ আহমদ, মাওলানা মুফতি মওসূফ আহমদ, কে, এমন, আবু তাহের চৌধুরী, মাওলানা সৈয়দ তামীম আহমদ,মাওলানা মামনূন মুহিউদ্দীন ও মাওলানা নাজমুল হুসাইন প্রমুখ। প্রোগ্রামের শুরুতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কারী শায়খ কাজী আশিকুর রহমানের তেলাওয়াতে কোরআন ছিল অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী ও মনমুগ্ধকর।
সভায় বক্তাগন বলেন, শেষ নবী- মহানবীর অগাধ ভালোবাসায় প্রতিটি মুমিন মুসলমানের অন্তর্জগত উদ্ভাসিত। মানব সমাজে শান্তি নিরাপত্তা ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে মহানবীর অবদান সমগ্র মানবজাতি কখনো ভুলতে পারেনা। এজন্য আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি যে মানবতা ও শান্তি- নিরাপত্তার কোন চিরশত্রুর পক্ষেই কেবল রহমতের প্রতিচ্ছবি- শেষনবীর এমন ন্যক্কারজনক চরিত্রহনন সম্ভব । এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ দুঃসাহসিক স্পর্ধা মানবতার যে ঘৃণ্য শত্রু দেখাতে পারে, তাকে ছাড় দেয়া যায়না, বরং এমন নরপশুর হিংস্রতার সর্বোচ্চ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার মাধ্যমেই সমাজকে পবিত্র ও কলুষমুক্ত করে বিশ্বে শান্তির পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব। মোদী সরকার যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ না করে, যদি উন্মাদনায়মত্ত এমন চরমপন্থী উগ্রবাদীদের শক্ত ভাবে লাগাম টেনে না ধরে, যদি শান্তি প্রতিষ্ঠার বৃহত্তর স্বার্থে এমন মিথ্যাবাদী তথ্য সন্ত্রাসীর কঠোর শাস্তি কার্যকর না করে, তাহলে বিশ্ব মুসলিমের রোষানলে পতিত হয়ে তারা ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হতে বাধ্য হবে।
বক্তা গন তাদের আলোচনায় লন্ডনে “মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত” শিরোনামে সর্বদলীয ঐক্যবদ্ধ সংগঠন তৈরীর প্রয়োজন তুলে ধরে বলেন মানব জাতির হেদায়েতের জন্য আল্লাহ তা’লা যুগে যুগে যত নবী রাসুল প্রেরন করেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বশেষ নবী ও রাসুল হচ্ছেন হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।তিনি আখেরি নবী।খাতামুন্নাবিয়্যীন।তার পরে আর কোন নবী আসবেনা এবং আসার প্রয়োজন ও নেই।এই আকীদা ও বিশ্বাসের নামই হচ্ছে আকীদায়ে খতমে নবুওয়ত।ঈমানদার হওয়ার জন্য এই আকীদায় বিশ্বাসী হওয়া অবশ্যই জরুরী।এই আকিদাকে অবিশ্বাস করে কেউ যদি এখন নবী বা রাসুল হওয়ার দাবি করে, তাহলে সে হবে দাজ্জাল মিথ্যুক ও কাফের।আর যারা এমন জঘন্য মিথ্যুককে নবী মানবে তারাও কাফের। এটা সমগ্র উম্মাহর সর্ববাদী সম্মত ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত। ঈমানের অস্তিত্ব পেতে হলে যেহেতু এ আকিদায় পরিপূর্ণরূপে বিশ্বাসী হওয়া আবশ্যকীয় একটি বিষয়, এজন্য মিথ্যা ও ভন্ড নবুওতের দাবিদার ও তাদের অনুসারীদের গভীর ষড়যন্ত্র থেকে আপামর জনসাধারণের ঈমান রক্ষার জন্য প্রত্যেক যুগের মত বর্তমান যুগেও একাডেমিক ও গবেষণাধর্মী কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি মুসলিম জাতিসত্তার অস্তিত্ব রক্ষার একান্ত প্রয়োজনে ঈমানী গন আন্দোলন অব্যাহত রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। এ গুরুত্বের তাগিদেই লন্ডনে সর্বদলীয় ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্ম হিসেবে “মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওত লন্ডন” নামে একটি সংগঠন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অস্তিত্ব লাভ করেছে। দলমত নির্বিশেষে এই ঈমানী সংগঠন ও আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করা প্রতিটি মুমিন- মুসলমানের উপর একটা গুরু দায়িত্ব।
প্রতিবাদ সমাবেশ শায়খুল হাদীস মাওলানা আবদুর রহমান মনোহরপূরীর মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হয়।
ভারতে মহানবী (সাঃ)’র অবমাননা সমগ্র বিশ্বে অশান্তির আগুন ধরিয়ে দেয়ার একটা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র: লন্ডনে প্রতিবাদ সভায় দোষীদের সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি
এইরকম আরও