বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান শুরু হচ্ছে শিগগির। এই অভিযানে নিয়মিত মামলার আসামীসহ ছিনতাই-চাঁদাবাজি ও মাদক প্রতিরোধে গুরুত্ব দেয়া হবে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিক থেকে দুই সপ্তাহব্যাপী এই অভিযান চলতে পারে বলে থানা পুলিশ সূত্র জানায়। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক এই অভিযান চলবে। পুরনো মামলার তালিকা দেখে দাগী অপরাধী এবং ফৌজদারীসহ রাজনৈতিক মামলার আসামীদের গ্রেফতারেও অভিযান পরিচালিত হবে।
সূত্রমতে, পুলিশের অভিযানে রাজনৈতিক মামলার আসামীসহ গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি মামলার সাথে সম্পৃক্তদেরও গ্রেফতার করা হবে। দূর্গাপূজার আগে থানা পুলিশ বিয়ানীবাজার থেকে আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা সায়ফুল আলম রুকন ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কলিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাদের রিমান্ড ও জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের আদেশ দেন। এই ঘটনার পর এমনিতেই আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক ঢুকে পড়ে। উপজেলার বেশিরভাগ আওয়ামীলীগ নেতা আত্মগোপনে রয়েছেন। একাধিক মামলার অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে আছেন কর্মীরাও। তবে এসব নেতাকর্মীর মধ্যে কেউ কেউ সামাজিক মাধ্যমে সরব রয়েছেন। তৃণমূলের অনেকেই এত দিন নিজ নিজ বাড়িতে ছিলেন। এসব কর্মীও এখন মামলায় অজ্ঞাত আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা ঘরছাড়া। তারা নিজেদের গোপন রাখার চেষ্টা করছেন। তাদের পরিবার-পরিজনরাও দিনরাত আতঙ্কের মধ্যে থাকছেন।
পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, সরকার পতনের পর বিয়ানীবাজারে এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাতসহ আওয়ামীলীগের অন্তত: হাজারখানেক নেতাকর্মী আসামী হয়েছেন। এছাড়াও নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের পুরনো সংঘর্ষ এবং মামলাও যাচাই করা হচ্ছে। গত ১৬ বছরে ছাত্রলীগের নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধ-সংঘাতে থানায় অন্তত: ২ ডজন মামলা রয়েছে। কিছু মামলা নিষ্পত্তি হলেও বেশীরভাগ মামলা চলমান। পুলিশী গ্রেফতার অভিযানে সেসব মামলাও সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী জানিয়েছেন, বিভিন্ন মামলায় যাদের নাম আছে, তারা জেনেবুঝেই আত্মগোপনে গেছেন। সতর্কভাবে থাকছেন। আর পুলিশের অভিযানে আসামীও অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে। রাজনৈতিক পরিচয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।