শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
No menu items!
Call for ad
Homeযুক্তরাজ্যফিলিস্তিনের সমর্থনে লন্ডনে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের সমর্থনে লন্ডনে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

দখলদার ইহুদীবাদী ইসরায়েল ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালাচ্ছে। টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন চার হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।ইসরায়েলি এই হামলার বিরুদ্ধে এবং ফিলিস্তিনিদের পক্ষে রাজধানী লন্ডনসহ যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। এদিন লন্ডনের পাশাপাশি বিক্ষোভ হয়েছে বার্মিংহাম, কার্ডিফ, বেলফাস্ট এবং সালফোর্ডেও।কেবল লন্ডনের বিক্ষোভেই অংশ নিয়েছেন এক লাখ মানুষ। রোববার (২২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা দ্বিতীয় সপ্তাহের মতো লন্ডনে ফিলিস্তিনিপন্থি বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে লাখো মানুষ। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুমান, শনিবারে এই বিক্ষোভ ও পদযাত্রায় এক লাখ মানুষ অংশ নেয়। পরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিটের কাছে সমাবেশের মাধ্যমে বিক্ষোভটি শেষ হয়।

বিবিসি বলছে, শনিবার লণ্ডনের পাশাপাশি বার্মিংহাম, বেলফাস্ট, কার্ডিফ এবং সালফোর্ডেও তুলনামূলক ছোট বিক্ষোভ হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলি বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত চার হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, লন্ডনে শনিবার আয়োজিত বিক্ষোভে এক হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা মোতায়েন ছিলেন। পরে আতশবাজি ব্যবহার, জন শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটানো এবং জরুরি পরিষেবা কর্মীকে লাঞ্ছনার সাথে জড়িত অপরাধের জন্য লন্ডনের বিক্ষোভ থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।অন্যদিকে কার্ডিফে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনি পতাকা ও সমর্থনমূলক নানা প্ল্যাকার্ড নিয়ে ওয়েলস পার্লামেন্টের দিকে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।বিবিসি বলছে, বেশ কয়েকটি গ্রুপের আয়োজিত এই বিক্ষোভ থেকে ব্রিটিশ ও ওয়েলস সরকারকে গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্য প্রচেষ্টা চালানো এবং পূর্ণ মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে জোর দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।ফিলিস্তিনি সলিডারিটি ক্যাম্পেইন কার্ডিফের ম্যাগি মরগান বলেছেন: ‘আমরা গাজার জনগণের প্রতি সংহতি প্রদর্শনের অংশ হিসাবে রাস্তায় নামছি, তাদের প্রতি আমরা আমাদের সমর্থন জানাতে চাই।গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের এ নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি।

যদিও ইসরায়েল দাবি করছে তারা হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাসের যোদ্ধাদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার বেসামরিক মানুষ। জাতিসংঘ বলছে, এই হামলায় প্রায় ১৪ লাখ গাজাবাসী বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর বাস্তুচ্যুত এসব মানুষের মধ্যে ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জাতিসংঘের ১৪৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।শনিবার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তারা গাজায় হামলার তীব্রতা আরও বৃদ্ধি করবেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার আরও বাড়ানো উচিত।
অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি সতর্ক করে দিয়েছেন, চলমান এই সংঘাত পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে গ্রাস করার হুমকি দিচ্ছে। ক্লিভারলি অবশ্য ইসরায়েল এবং অধিকৃত অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান সংকটকে ঘিরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ইসরায়েল, তুরস্ক এবং কাতার সফর করেছেন।বিবিসি বলছে, শনিবার লন্ডনের বিক্ষোভ মিছিলে বিক্ষোভকারীদের ফিলিাস্তনপন্থি নানা স্লোগান দিতে শোনা যায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইসরায়েলসহ জর্ডান নদী এবং ভূমধ্যসাগরের মধ্যবর্তী সমস্ত ভূমি ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণের দেওয়ার দাবি জানান।ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্র্যাভারম্যান বলেছেন, ‘নদী থেকে সমুদ্র পর্যন্ত, ফিলিস্তিন একটি স্বাধীন দেশ হবে’ স্লোগানটির মাধ্যমে কার্যত ইসরায়েলকে ‘ধ্বংস করার’ আহ্বান জানানো হয়েছে।এছাড়া বেলফাস্টে বিবিসি নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড সদর দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভকারীরা বেশ বড় বিক্ষোভ করেছেন। পিপল বিফোর প্রফিট অ্যাসেম্বলির সদস্য গেরি ক্যারল বলেছেন, বিবিসি যেভাবে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান এই সংঘাতের খবর প্রকাশ করেছে, সেটিকে ‘চ্যালেঞ্জ’ করাই তাদের লক্ষ্য।অন্যদিকে স্যালফোর্ডে আয়োজিত বিক্ষোভটিও মিডিয়া সিটি কমপ্লেক্সের বাইরে অনুষ্ঠিত হয়। মূলত সেখানেই বিবিসির অফিস রয়েছে এবং বিক্ষোভকারীরা এসময় গাজা যুদ্ধ নিয়ে বিবিসির বিভিন্ন প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন।

এইরকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপণ -
advertise

সর্বাধিক পঠিত