সবাইকে সম্মিলিত উৎসবমুখোর পরিবেশে পরিপূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে আসন্ন দুর্গাৎসব পালনের আহ্বান জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেছেন, দুর্গাপূজা ঘিরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা-অপতৎপরতার কোনো সুযোগ নেই।
সোমবার (৭ অক্টোবর) দুপুরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ ৮০০ বছর পুরোনো ঐতিহ্যবাহী ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করলাম। অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে আমরা দেখলাম পূণ্যার্থীরা পূজা অর্চনা করছেন। এখানে আসন্ন দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করছি সারাদেশে সাড়ে ৩১ হাজারের বেশি পূজা মণ্ডপে অত্যান্ত শান্তি-শৃঙ্খলা সহকারে পরিপূর্ণ নিরাপত্তার সঙ্গে ধর্মীয় উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে উৎসবমুখোর পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে। এই পূজার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করছে।
পূজা মণ্ডপে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থার তিনটি পর্যায় রয়েছে। এখন প্রাক পূজা ব্যবস্থার আওতায় আমরা প্রতিটি জায়গায় টহল বাড়িয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ পূজা মণ্ডপগুলোতে ইতোমধ্যে আনসার-ভিডিপি মোতায়েন হয়েছে। আগামীকাল থেকে সব পূজা মণ্ডপে আনসার-ভিডিপি মোতায়েন হবে। অন্যান্য পুলিশের যে স্ট্রাইকিং ও টহল ফোর্স তাদেরও মোতায়েন করা হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রতিটি জেলায়, প্রতিটি অঞ্চলে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন আছে। তারাও পূজার ডিউটি পালন করবে। এবং সীমান্ত এলাকায় বিজিবি, উপকূলীয় এলাকায় কোস্ট গার্ড, নৌ-অঞ্চলে নৌ পুলিশসহ বিশেষিয়ত যে পুলিশ বাহিনী রয়েছে তারাও দায়িত্ব পালন করছে।
আইজিপি আরো বলেন, যেকোনো জায়গায়, যে কোনো পূজা মণ্ডপে যদি কেউ শান্তি-শৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটায়, যদি কেউ অপতৎপরতা চালায়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিক দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের মোবাইল টিমসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স কাছাকাছি দূরত্বে থাকবে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে পর্যাপ্ত সংখ্যক শৃঙ্খলা বাহিনী, আনসার বাহিনীর সঙ্গে সেচ্ছাসেবকরা রয়েছে। তারাও ২৪/৭ কাজ করছে৷ সুতরাং কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা, অপতৎপরতার কোনো সুযোগ নেই৷
তিনি আরো বলেন, আমরা সাইবার মনিটরিং জোরদার করেছি, সাইবার পেট্রোলিং এর ব্যবস্থা রেখেছি। যাতে করে কেউ ইলেক্ট্রনিক বা স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে কোনো ধরনের মিথ্যা প্রচারণা, গুজব বা অতিরঞ্জন কিছু ঘটতে না পারে। আমাদের জরুরি ৯৯৯ সেবাও চালু আছে। প্রতিটি জেলায়, উপজেলায় ও পুলিশ হেডকোয়ার্টারে আমরা কন্ট্রোল রুম চালু করেছি। যেখানে যেকেউ তাৎক্ষিকভাবে যেকোনো সংবাদ জানাতে পারবেন।
পূজা মণ্ডপের সংখ্যা কমে যাওয়া ও পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পূজা মণ্ডপের সংখ্যা নানা কারণে হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। এবার বন্যার কারণে কিছু পূজা মণ্ডপের সংখ্যা হয়তো কম। আমাদের সাড়ে ৩১ হাজারের বেশি মণ্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। ঢাকায় কিন্তু বিগত বছরের তুলনায় ৬টি পূজা মণ্ডপ বেড়েছে। সুতরাং পূজা মণ্ডপ কমা বা বাড়ার সঙ্গে অন্য কিছু জড়িত না। এছাড়া আমরা সবাইকে অনুরোধ করেছি প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসিটিভি ক্যামেরা, আইপি ক্যামেরা থাকলে নজরদারী ভালো হয়। যেসব পূজা মণ্ডপে ঝুঁকি রয়েছে সেগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। কিন্তু অনেক প্রত্যান্ত এলাকায় সামর্থ্যে কারণে সেটি করা যায়নি। সব জায়গায় সম্ভব হয়নি। তবে এটি নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই।