উৎসবমুখর, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে সারাদেশে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছে।সোমবার সকাল ৯টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে একটানা দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে।ইসি সূত্র জানায়, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫৭টি জেলায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ৯২ জন, সদস্য পদে ১ হাজার ৪৮৫ জন ও সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদে ৬০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নির্বাচনে মোট ভোটার ৬০ হাজার ৮৬৬ জন। এই নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডের ৪৪৮টি, সংরক্ষিত ওয়ান্ড ১৬৬টি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪৬২টি এবং ভোট কক্ষের সংখ্যা ৯২৫টি।এবার দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে তিন পার্বত্য জেলা বাদে ৬১ জেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হয় ৫৭ জেলায়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী জেলা পরিষদ নির্বাচন আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়েছে।অন্যদিকে, ভোলা ও ফেনী জেলার সব পদে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এই দুই জেলায় কোনো নির্বাচন হচ্ছে না। ইতিমধ্যে জেলা পরিষদ নির্বাচনে ২৬ জন চেয়ারম্যান, ১৮ জন মহিলা সদস্য এবং ৬৫ জন সাধারণ সদস্যসহ মোট ১০৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
প্রতি উপজেলা সদরে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি, জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার হিসেবে ভোট দেন।এদিকে, জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৭ জন সদস্য মোতায়েন করে ইসি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স ও র্যাবের একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স মোতায়েন রয়েছে। এছাড়াও বৃহত্তর ১৯টি জেলায় দুই প্লাটুন ও অন্যান্য জেলায় এক প্লাটুন বিজিবি রিজার্ভ ফোর্স হিসেবে মোতায়েন রাখা হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন।এদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ভোটকক্ষে ভোটাররা যাতে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করতে না পারেন, অথবা ভোটকক্ষে ভোটদান বিশেষ করে গোপন কক্ষে ভোট দেওয়ার ছবি তুলতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিবিড় পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সকাল থেকেই প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার নির্বাচন কমিশনারসহ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা নির্বাচন কমিশন থেকে সারাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন।গত ২৩ আগস্ট, পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা পরিষদ বাদে ৬১টি জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।ইসির তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ননপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয় ১৮ সেপ্টেম্বর এবং প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ছিল ২৫ সেপ্টেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ হয় ২৬ সেপ্টেম্বর।জেলা প্রশাসক নিজ জেলায় নির্বাচনী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।