শুক্রবার, নভেম্বর ২২, ২০২৪
No menu items!
Call for ad
Homeবাংলাদেশকোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী

কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটার বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে নিষ্পত্তি করা উচিত।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় এটার বিরুদ্ধে এভাবে আন্দোলন করা এটাতো সাবজুডিস। কারণ আমরা সরকারে থেকে কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো কথা বলতে পারি না। কারণ হাইকোর্ট রায় দিলে সেটা হাইকোর্ট থেকেই আবার আসতে হবে।

রোববার সকালে যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গণভবনে নেতারা সাক্ষাৎ করতে এলে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে একটা কথা আমি না বলে পারছিনা, আমরা দেখছি যে কোটা আন্দোলন। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যে কোটা সেটা বাতিল করতে হবে। নারীদের কোটা বাতিল করতে হবে। এ ধরনের নানা কথা শোনা যাচ্ছে। যেটা একবার বাতিল করা হয়েছিল কিন্তু ফলাফলটা কি?

তিনি বলেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার হিসাব যদি দেখা যায় তাহলে দেখা যেত আগে কোটা থাকাতে মেয়েরা যে সংখ্যায় সুযোগ পেত সে সুযোগ কিন্তু এই গত কয় বছরে পায়নি। এটা হলো বাস্তবতা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এমনকি অনেক অনেক জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো কিন্তু বঞ্চিত থেকে গেছে। তারাও চাকরি পাচ্ছে না। আর এ রকম বঞ্চিত হওয়ার কারণেই কেউ মামলা করে যেন হাইকোর্ট একটা রায় দেন। হাইকোর্টের রায়টা আমরা সবসময়ই মেনে নেই। কিন্তু আমরা এখন দেখলাম যে কোটা বিরোধী আন্দোলন এখন আবার গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে কোটা বিরোধী আন্দোলন করছে, সেখানে মেয়েরাও করছে।

তিনি বলেন, এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে, যারা এর আগে কোটা বিরোধী আন্দোলন করেছিল তারা কয়জন পাবলিক সার্ভিস কমিশনে পরীক্ষা দিয়েছিল, আর কতজন পাশ করেছিল, সেই হিসাবটা একটু বের করা দরকার। তারা দেখাক যে পরীক্ষা দিয়ে তারা বেশি পাশ করেছিল, মেয়েরা বেশি পরীক্ষা দিয়ে বেশি চাকরি পেয়েছে কী না? সেটা আগে তারা প্রমাণ করুক।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আন্দোলনের নামে যেটা আবার করা হচ্ছে, পড়াশোনার সময় নষ্ট করা এটার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।

উল্লেখ্য, সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে সরকারের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা আন্দোলন করছেন। যদিও স্বাধীনতার পর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণির চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা চলে আসছিল। এক পর্যায়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ২০১৮ সালের অক্টোবরে নবম থেকে ১৩ তম গ্রেডের (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করেছিল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

প্রধানমন্ত্রী সার্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে বলেন, সার্বজনীন পেনশন স্কিম আমরা দিয়েছি সবার জন্য। এটা আমাদের ২০০৮ এর নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। যেটা আমরা করতে পেরেছি।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র সরকারি চাকরিজীবীরাই পেনশন পায় আর বাকীরা বঞ্চিত থাকে। কাজেই কেউ যেন বঞ্চিত না থাকে সেজন্য এই পেনশন স্কিমে বিভিন্ন স্তর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, আমাদের যুব মহিলা লীগের প্রত্যেকেই এই সার্বজনীন পেনশন স্কিমে যুক্ত হতে পারে। যুক্ত হতে পারে নিজেদের একটা ভবিষ্যতের জন্য।

তিনি বলেন, যখন মানুষের বয়স হয়ে যাবে বা তারা কর্মক্ষম থাকবে না; এর মাধ্যমে তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি নিশ্চিত অর্থ প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে। এটা কিন্তু আজীবন পাবে। আমি মনে করি যারা আমাদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত তাদের এ ধরনের পেনশন স্কিমে ঢোকা দরকার। আর যারা একেবারে প্রান্তিক বা নিম্ন আয়ের মানুষ রয়েছে তাদের জন্য এতে বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, যুব মহিলা লীগ সবসময়ই আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিল। অনেক সময় তারা যেমন পুলিশের হাতে নির্যাতিত তাই নয়, বিএনপির অস্ত্রধারী নেতাকর্মীরাও আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো যুব মহিলা লীগের ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন করেছে। তাদের সেই অত্যাচারের অনেক ছবি-চিত্র অনেক কিছুই এখনো রয়েছে। অত্যাচার নির্যাতনকালে মা-বোন বলে তারা কোনো সমীহ করেনি।

তিনি বলেন, তারা এতই জঘন্য প্রকৃতির নির্যাতন করেছে, যেটার নিন্দা করার ভাষা আমার নেই। কারণ তারা সে সময় মানুষ নয় জানোয়ারের থেকেও অধম জীবে পরিণত হয়েছিল। তারপরেও সব বাধা অতিক্রম করে প্রত্যেকটা সংগ্রামে যুব মহিলা লীগ রাজপথে থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। এমনকি আমাকে গ্রেফতারের সময় বাধা দিতে গিয়ে অনেকে গ্রেফতার হয়ে করা বরণ করেন। যাদের অনেককে ছোট বাচ্চা ঘরে রেখেও কারাগারে যেতে হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। সেই সংগ্রামের পথ বেয়েই আজকে আমরা সরকারে আসতে পেরেছি এবং অত্যাচার নির্যাতন যতই হোক আমরা মাথা নত করিনি। আর আমরা একটাই জিনিস চেয়েছিলাম গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠিত হোক।

এ সময় খালেদা জিয়ার ’৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ভোটারবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠান ও দেড় মাসের মাথায় তার পদত্যাগে বাধ্য হওয়া, দেড় কোটি ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচনে জয়লাভের চেষ্টা, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তাকে গ্রেফতার করা হলে তার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন এবং স্বাক্ষর সংগ্রহে যুব মহিলা লীগের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন শেখ হাসিনা।

তিনি তার সরকারের নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি এবং নারীর ক্ষমতায়নের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন।

এরআগে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নেতারা ফুল দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান। অনুষ্ঠানে যুব মহিলা লীগের ওয়েবসাইট ও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০০২ সালের ৬ জুলাই আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা ছাত্রলীগের এক ঝাঁক সাবেক নেত্রীকে নিয়ে যুব মহিলা লীগ গঠন করেন।

এইরকম আরও

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- বিজ্ঞাপণ -
advertise

সর্বাধিক পঠিত